নির্বাচনে আমাকে অযোগ্য করার নীলনকশা করেছে ক্ষমতাসীনরা

0
kalada

kalada

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দাবি করেছেন, তাকে রাজনীতি থেকে বিদায় ও আগামী নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে নীলনকশা প্রণয়ন করেছে সরকার।

বৃহস্পতিবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে আদালতে অসমাপ্ত বক্তব্যকালে এ দাবি করেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও নেতারা হুমকি দিচ্ছে- আমাকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বিদায় করে দেয়া হবে। অসৎ উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরাতে আমাকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার নীলনকশা প্রণয়ন করছে ক্ষমতাসীনরা।

তিনি বলেন, আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, শেখ হাসিনার কাছে জাদুরকাঠি আছে। সেই জাদুরকাঠির ছোঁয়ায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়ম-চাঁদাবাজিসহ সব মামলা সরকারে আসার পর উঠে গেছে অথবা খারিজ হয়ে গেছে। আমাদের কারো হাতেই তেমন কোনো জাদুরকাঠি নেই। কাজেই আমাদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো সচল হয়েছে এবং আরো নতুন নতুন মামলা হচ্ছে।

খালেদা জিয়া আরও বলেন, অথচ দেশে কত গুরুত্বপূর্ণ মামলা বছরের পর বছর ঝুলছে। শুধু আমার বিরুদ্ধে মামলাগুলো রকেটের গতিতে ছুটে চলছে। যেন কেউ পেছন থেকে তাড়া করছে— শিগগির শেষ কর, একটি রায় দাও। অনেক মন্ত্রীকে বলতে শুনেছি- আমাকে দণ্ড দিয়ে কাশিমপুর কারাগারে পাঠাবে।

আদালতকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি নেত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের অনেক সদস্য এবং শাসক দলের অনেক নেতা আমাকে দোষী সাব্যস্ত করে বক্তব্য দিয়েছেন। আমাকে অভিযুক্ত করে বিরূপ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা এসব মামলার রায় কী হবে, তা আগাম জানেন।

তিনি আরও বলেন, অনেকে তাদের বক্তব্যে মামলায় আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। আমাকে রাজনীতি থেকে বিদায় করে দেয়া হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন। সে বিষয়ে এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের উচ্চমহলের তৎপরতায় বক্তব্য ও বিবৃতি থেকে এসব স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়।

আজ সেসব কারণে দেশবাসীর কাছে গুরুতর সন্দেহ রয়েছে, আমার বিরুদ্ধে মামলাগুলোর ন্যায়বিচার হবে না বলে আত্মপক্ষ সমর্থন করে দেয়া বক্তব্যে উল্লেখ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বকশীবাজারের বিশেষ আদালতে পৌঁছান তিনি।

আদালতে প্রথমে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দেন তিনি।

এর পর দুপুর ১টার দিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দিতে শুরু করেন তিনি।

এদিকে আদালতে হাজিরা দিতে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তিনি তার গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে আদালতের উদ্দেশে বের হন।

উল্লেখ্য, গত ১৯ অক্টোবর দুর্নীতির দুই মামলায় দুই লাখ টাকা মুচলেকায় শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

ওই দিনই তিনি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে এক ঘণ্টা বক্তব্য দেন।

পরে ২৬ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে দ্বিতীয় দিনের মতো বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

এর আগে গত ১২ অক্টোবর হাজির না হওয়ায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ ছাড়া ২০০৮ সালের ৩ জুলাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করে দুদক।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *