পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় হ্যান্ডকাপ পরিয়ে খুন্তি গরম ছ্যাঁকা

0
torture20170520130523

torture20170520130523

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার বৈশাখীপাড়া এলাকায় মায়ের পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় মেয়েকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে খুন্তি গরম করে পায়ে ছ্যাঁকাসহ বিভিন্ন নির্যাতন করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার মায়ের বিরুদ্ধে নড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে মেয়ে ঐশি।

এ ঘটনায় মা রুমিকে গ্রেফতারের পর শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এদিকে রুমির ঘর থেকে এক জোড়া হ্যান্ডকাপ উদ্ধার করা হয়েছে।

রুমি আক্তার নড়িয়া উপজেলার ঘোষপাড়া এলাকার ইতালি প্রবাসী সুমন কাজীর স্ত্রী। মেয়ে ঐশী আক্তার (১৩) নড়িয়া বিহারী লাল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।

স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সুমন কাজী শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
তিনি ৮ বছর যাবত ইতালি রয়েছেন। স্ত্রী রুমি আক্তার, মেয়ে ঐশী আক্তার ও ছেলে রাহাতকে (৮) নড়িয়া পৌরসভার বৈশাখী পাড়ার জুয়েল ছৈয়ালের বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন।

স্বামীর অবর্তমানে ২০১১ সালে নড়িয়া থানার সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে রুমির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু মায়ের অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করায় ঐশীর ওপরে নির্যাতন চালানো হয়। ঐশীকে পুলিশের হ্যান্ডকাপ পরিয়ে মাঝে-মধ্যেই খুন্তি গরম করে পায়ে ছ্যাঁকাসহ বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করতেন রুমি।

গত মঙ্গলবার ঐশী বিষয়টি তার বাবাকে জানাবে বললে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রুমি। এক পর্যায়ে পায়ে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে ঐশীকে প্রথমে খুন্তি গরম করে পায়ে ছ্যাঁকা ও পরে বটি দিয়ে কোপ দেয়। এতে ঐশীর বাম হাতের কনুই কেটে যায়। তার হাতে ১১টি সেলাই দেয়া হয়েছে।

পরে রুমি ঐশীকে মঙ্গলবার হাসপাতালে নিয়ে গোপনে চিকিৎসা করান। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঐশী নড়িয়া থানায় মায়ের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রুমি ফের ঐশীর পায়ে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে নির্যাতন করতে থাকলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে রুমিকে আটক করে নড়িয়া থানায় নিয়ে যায়। রুমিকে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

ঐশী আক্তার জানায়, গত মঙ্গলবার মা কার সঙ্গে যেন ফোনে কথা বলছিল এবং তার সঙ্গে ফোনে ঝগড়াও হয়। ফোন রেখে আমাকে ও আমার ছোট ভাই রাহাতকে (৮) অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ পায়ে হ্যান্ড কাপ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকী দিয়ে বলে যে তুই যদি এই ঘটনা কাউকে জানাস তাহলে তোকে জানে মেরে ফেলব। এসময় আমার পা থেকে হ্যান্ড কাপ খুলে দিতে বললে এবং এই ঘটনা আব্বুকে জানাতে চাইলে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে খুন্তি গরম করে পায়ে ছ্যাঁক দেয়, পরে বটি দিয়ে বাম হাতে কোপ মারে।

পরে চিকিৎসা করিয়ে আমাকে বাসায় এনে আটকে রাখে। ছোট ভাই রাহাতকে মারতে গেলে আশপাশের লোকজন এসে আমাদেরকে উদ্ধার করে। আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। হাত কড়ার কথা জিজ্ঞাসা করলে ঐশী বলে এটা দারোগা ফিরোজ আঙ্কেলের।

এ বিষয়ে নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বলেন, এ ঘটনায় ঐশী আক্তার মা রুমির বিরুদ্ধে থানায় এসে একটি মামলা দায়ের করেছে। রুমিকে গ্রেফতার করে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞেস করলে মেয়েকে নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া যায়। শুক্রবার রুমিকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *