বিটিভি ডিজিটাল হওয়ার যে প্রক্রিয়া তা শুরুতেই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে

0
888888888888

888888888888

অনলাইন ডেক্স: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করে ১৯৭৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ডিআইটির ক্ষুদ্র পরিসর থেকে রামপুরার বৃহত্তর পরিমণ্ডলে স্থানান্তর করা হয় বিটিভির কেন্দ্রটি। বর্তমানে সারাদেশের নানা প্রান্তের শ্রোতা-দর্শকদের জন্য বিটিভির ১৪টি উপকেন্দ্রের মাধ্যমে ঢাকা কেন্দ্র থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠান রিলে হয়ে থাকে। ১৯৯৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ টেলিভিশনের একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপিত হয়। পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় শহরগুলোয় বিটিভির পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র চালুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। দেশের সীমানা পেরিয়ে ২০০৪ সালের ২১ এপ্রিল থেকে পৃথক চ্যানেলে বিটিভি ওয়ার্ল্ডের আত্মপ্রকাশ এবং ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর থেকে বিটিভির অনুষ্ঠানমালা ২৪ ঘণ্টা স্যাটেলাইট সম্প্রচার শুরু হয় দর্শকদের জন্য।

কিন্তু অযন্তে ও অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বিটিভির আর্কাইভের ক্যাসেট গুলি। সম্প্রতি দেখা যায় বড় ঘরটার ভেতরে ইস্পাতের বড় বড় তাক। একেকটা তাকের শুরুতে নাম লেখা। সবাই বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রযোজক। তালিকায় থাকা কেউ অবসর নিয়েছেন, কেউ এখনো কাজ করছেন। তাকের ভেতরে সার বেঁধে রাখা আছে প্রযোজকদের নির্মাণ করা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ক্যাসেট। বেশির ভাগই বেটা ফরম্যাটে। ৫৩ বছর পার করা বাংলাদেশ টেলিভিশনে এত দিনে কম ক্যাসেট জমেনি। কিন্তু অযত্ন ও অবহেলায় অনেক ক্যাসেটই আর চলছে না। নতুন প্রযোজকের প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য জানতে আর্কাইভ থেকে ক্যাসেট নিয়ে গিয়ে দেখেন বেশির ভাগ পুরোনো ক্যাসেটের ভেতরে ফিতা ছেঁড়া ও নষ্ট। ক্যাসেট থেকে ডিজিটাল রূপান্তরের কাজ করতে গিয়ে বিপদে পড়ছেন অনেক প্রযোজক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রযোজক বলেন, ‘বিটিভি ডিজিটাল হওয়ার যে প্রক্রিয়া, তা শুরুতেই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের অনেক পুরোনো অনুষ্ঠান ও প্রয়োজনীয় তথ্যও হারিয়ে যাচ্ছে।’

সম্প্রতি দেখা যায়, আর্কাইভের ভেতরে তাকগুলোয় ধুলো-ময়লা জমেছে। বেটা ক্যাসেটেও জমেছে ধুলো। এ ছাড়া তাকের নিচেও অযত্নে পড়ে আছে বেশ কিছু ক্যাসেট। রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলার ছাপ স্পট।

১৯৬৪ সালে রাষ্ট্রমালিকানাধীন টেলিভিশন চ্যানেল হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে বাংলাদেশ টেলিভিশন। তবে চ্যানেল শুরু হলেও শুরু থেকেই আর্কাইভ ছিল না। ২০০৩ সালে বিটিভির পুরোনো ভবনের তিনতলায় আর্কাইভ উদ্বোধন করা হয়। তারপর থেকেই শুরু হয় আর্কাইভের কার্যক্রম। কিন্তু পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান বিটিভির মুখ্য বার্তা গ্রন্থাগারিক শামছুন নাহার খানম। তিনি বলেন, ‘একজন গ্রন্থাগারিক ও আর্কাইভের অধীনে নয়জন কর্মী থাকার কথা। কিন্তু আমরা তিনজন আছি এবং অন্য বিভাগের চারজন দেওয়া হয়েছে। যাঁরা আর্কাইভের ক্যাসেট ইস্যু করা ও ফেরত নেওয়ার কাজ করেন। আর আমাদের তিনজনের একজনকে নতুন ভবনে লাইব্রেরির কাজে নেওয়া হয়েছে। আমরা বাকি দুজন আর্কাইভের ক্যাসেটগুলো সুশৃঙ্খলভাবে সংরক্ষণ করার কাজটুকু করি।’

ক্যাসেট ও লাইব্রেরি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শামছুন নাহার খানম বলেন, ‘আমরা যতটুকু পারি রক্ষণাবেক্ষণের চেষ্টা করি। তবে এটা আমাদের কাজ নয়। প্রকৌশল বিভাগের কাজ। তা ছাড়া এসবের জন্য নির্দিষ্ট কোনো লোক নেই। প্রকৌশল বিভাগও মাঝেমধ্যে এ কাজ করেন।’ তিনি জানান, এর আগে লোকবলের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তবে লোকবল নিয়ে ক্যাসেটগুলো দ্রুতই রক্ষণাবেক্ষণ ও ডিজিটাল করার কাজটা শুরু হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *