বিয়ের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় জীবন দিতে হলো ফয়সাল নামের এক যুবককে
মো. আবুল কাশেম ভূঁইয়া : কুমিল্লার হোমনায় বিয়ের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় জীবন দিতে হলো ফয়সাল নামের এক যুবককে। ঘাতকরা মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে হত্যা করে লাশ ঘুম করার চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হলো না। এমন হৃদয় বিদারক খুনের ঘটনায় এলাকায় শোকের মাতম। সকলের দাবি এমন খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের মুকবল মিয়ার ছেলে ফয়সাল। একই গ্রামের তালিকাভূক্ত খুনি কসাই ফুল মিয়ার মেয়ে মেহেদী আক্তারকে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার জেরেই খুন হতে হলো তাকে।
গত ৫জুন শুক্রবার রাতে মেহেদীর আক্তারের মামাতো ভাই দুলাল মোবাইল ফোনে ফয়সালকে ডেকে নিয়ে যায় একটি নির্জন এলাকায়। সেখানে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সংঘবদ্ধ ঘাতকরা ফয়সাল তুলে নিয়ে কসাই ফুল মিয়ার একটি ঘরে তাকে জবাই করে হত্যা করে। এরপর ঘাতক শামিমের মামা আমিরুল ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী জসিম মিয়া উরফে জসুর সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের নব নির্মাণাধীন ভবনের একটি কক্ষের মাটির নিচে পুতে রাখা হয় ফয়সালের মৃতদেহটি। এমন হৃদয় বিদারক হত্যাকান্ড দেখে হতবাক এলাকাবাসী। তারা জানান, এর আগেও এই ঘাতক পরিবারটি একাধিক খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। একই স্কুলের ভিতরে কয়েক বছর পূর্বে এক গৃহবধুকে পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যার পর ঘুম করেছিলো। ফলে খুনি এ পরিবারটির বিরুদ্ধে দুষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করলেন তারা।
নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার ফয়সালের পরিবারের চলছে শোকের মাতম। বিলাপের সুরে তার নানী জানান, বিয়ের জন্য রাজী না হওয়ায় ফয়সালকে হত্যা করেছে খুনিরা।
ঘাতক ফুল মিয়ার পরিবারটি একাধিক খুনের সাথে জড়িত থাকার কথা জানিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানান স্থানীয় ৩নং দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন সওদাগর, চেয়ারম্যান ।
এদিকে, ফয়সাল নিখোঁজ হওয়ার দুইদিন পর অর্থাৎ ৭জুন রোববার তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয় এবং সাধারণ ডায়রী করা হয়। ঘটনার ৪দিন পর মঙ্গলবার ঘাতকের মা লাইলী বেগম একটি রক্তমাখা পলিথিন নদীতে পরিস্কার করেছে এমন খবরে পুলিশের সন্দেহ বেড়ে যায়। পরে ১৩ জুন অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হলে রক্তমাখা পলিথিনসহ ঘাতকের মা লাইলী বেগম ও বোন মেহেদী আক্তারকে অপহরণ মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
অন্যদিকে হোমনা থানা পুলিশের পাশাপাশি রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডি.বি)। বিষয়টি টের পেয়ে খুনিরা গা ঢাকা দেয়। পরে ১৬ জুন মঙ্গলবার তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানী ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে ঘাতক শামীমকে গ্রেফতারের পরই বেরিয়ে আসে ফয়সালকে হত্যার চা ল্যকর তথ্য। ঘাতক শামিমের দেয়া তথ্যেও ভিত্তিতেই ফয়সালের লাশ উদ্ধার করে এবং তার মামা স্কুলের নৈশপ্রহরী জসু মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।