শুধু বিনিময়ে নয়, রাজনীতি হবে ত্যাগেরঃ এডভোকেট নাহিদ সুলতানা যূথী

এডভোকেট নাহিদ সুলতানা যূথীঃ
স্বাধীনতা শব্দটি আমার খুব প্রিয়, কাজের ক্ষেত্রে ও স্বাধীনতা কে বেছে নিয়েছিলাম কিছু না বুঝেই, যখন বিদেশে ছিলাম, কাজ করতে গিয়ে বুঝেছিলাম কেন আমি আইন পেশাকে বেছে নিয়েছিলাম, এভাবে ও বলা যায় হয়ত আইনজীবী ছিলাম বলেই অন্য কোনও কাজ আমার ভাল লাগে নাই তাই, কাজ আমার করা হয়ে উঠে নাই।
২০০৮ আমি ছিলাম সুপ্রিম কোর্ট বার এর ট্রেজারার, এছাড়া রাজপথে মাঠে ময়দানে থেকেছি, কার ও অজানা নয়, বিচারপতি হওয়ার জন্য ব্যারিস্টার রাফিকুল হক স্যার বললেন এভাবে ‘ ওকে উপড়ে তুলে দাও। বলে রাখি তখন সবে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় ব্যারিস্টার রফিকুল হক স্যার যাকে আমরা চেম্বার এর সবাই চাচা ডাকতাম, তিনি অনেক আওয়ামীলীগ এর নেতাদের ছাড়িয়ে আমাদের নেত্রীর মামলা করলেন। তখন অনেকেই ১/১১ এর ভয়ে পিছুটান দিয়েছেন কিন্তু যিনি কখনও আওয়ামীলীগ করেন নাই উনিই বঙ্গবন্ধুর কন্যার জন্য আইনি লড়াই লড়েছিলেন।
আমি বলে দিলাম সাফসাফ আমি বিচারপতি হবো না আমাদের চেয়ে অনেক সিনিওর আইনজীবীরা আছেন উনাদের আগে মূল্যায়ন করেন পরে আমরা আছি । এখন বুঝি এমন সুযোগ কেউ হাত ছাড়া করে? আমার কিন্তু আক্ষেপ নাই, হা আমি করেছি, আমি ই পারি, আসলেই অনেক কিছু পারি যা অন্যেরা পারেন না। ২০০৯ আমি আমার যোগ্যতায়, আমার কাজের অবদান সরূপ আমার তদবিরে ৯ জন এ এ জি / ডি এ জি বানিয়েছিলাম। কেন বললাম ? আমি বানিয়েছিলাম। আমি হই নাই কিছু, আমি বানাতে পারি, আমি ছাড়তে পারি আমি নিতে জানিনা, আমি বরাবর দিয়েছি।
আমার আসলে কিছু হওয়ার প্রয়োজন হয়না। কেন? সেই আগের উপাখ্যান আমি বন্দি হতে চাই নাই। আমি স্বাধীন চেতা, আমি চাকরির শিকলে বন্দি হলে আমার স্বকীয়তা নষ্ট হবে,আর সর্বোপরি আমার ভাল লাগেনা কাজের বিনিময়ে কিছু পেতে। নিজেকে কেমন জানি!!!
বললাম না? স্বাধীন ভাবে কাজ করতে চেয়েছি বরাবর-ই, আমার উপর আরোপিত হবে; আমি কোন মামলা করতে পারব আর কোনটা পারব না। এটা মেনে নিতে চাই নাই। আমি আইনজীবী। আমার স্বাধীনতা আছে, আমি কোন মামলা করব আর কোনটা করব না, এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল সরকারের যে কোনও পদ নিলে তাকে অনেক কিছু মানতে হবেই এটা মেন্ডেটোরী, যেমন-সরকারের বিপক্ষে কোনও মামলা পরিচালনা করা যায় না (কিন্তু নামে বেনামে হয়, আমি চুরি করে কিছু করা পছন্দ করি না, আমার বাক্তিগত মতামত )
এমন কি দেশের বাইরে গেলে জিও,নিতে হয় তার মানে সব ক্ষেত্রে অন্যের ইচ্ছার সাথে আমার ইচ্ছা যোগ হচ্ছে তাই আমি কাজের বিনিময়ে কিছু চাই নাই, আমি কাজ করি মনের তাগিদে, আমি কিছু পাবার আশায় কিছু করি না, তা অনেকেই জানে।
২০১৯-এ নতুন ডি এ জি/ এ এ জি নিয়োগ হল, দীর্ঘ ১০ বছর বসে বসে থেকেছে দুই একজন, পদোন্নতি হয় নাই বলে বার চেম্বার এ সময় কেটেছে অনেকের। আপনাদের এত কথা! কিন্তু চাকরি ছাড়েন নাই! পেরেছেন চাকরি ছাড়তে? এতো সহজ না লোভ সামলানো । আমার হাতে দেখানো হল ২৫/৩০ এর সিভি, কিন্তু সামনের রুমে যখন গেলাম হাতে ধরিয়ে দেয়া হল ৭ জনের নাম । আচ্ছা আমি একটু কম বুঝি, যে নিজে চায় সে অন্যকে কি দিবে? নিজের চাহিদার তদবির করলে কি অন্যের তদবির করা যায়? আমি চাকরির সুপারিশ করেছি অনেকের, আমার সুপারিশ না হলে ডি এ জি’র মুখ অনেকের-ই দেখতে হতোনা।
তাই বলি, স্বাধীন বলেই এতকথা বলতে পারি। সরকার এর কোনও পদ দখল করি নাই, আমি সরকারের বেতন ভুক্ত না । কখন ও ছিলাম না কিন্তু আমার অবদান কি আছে তা নূতন করে বলতে চাই না। আমি বুঝি আমি চাকরি করলে আমাকে দায়িত্ব নিতেই হবে, জবাবদীহিটা থাকতেই হবে। চাকরি করব কিন্তু জবাব দীহি করব না, তাতো হয় না। চলবে……।
লেখকঃ এডভোকেট নাহিদ সুলতানা যূথী,
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, ঢাকা।