সুশান্তকে খুন করেছে দাউদ ইব্রাহিম, দাবি সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার

0
Sushant-Singh-Rajput_172b2ed7e77_original-ratio

সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর বলিউড ব্যক্তিত্ব, গণমাধ্যম, অনলাইন ও ছাপা কাগজে শুরু হওয়া বিশ্লেষণ যেন থামছেই না। গত ১৪ জুন সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বান্দ্রার কার্টার রোডের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে। তাঁর ময়নাতদন্তের পূর্ণ রিপোর্টে বলা হয়েছে, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তরুণ অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত। অবশ্য সুশান্তের পরিবারের অভিযোগ ছিল যে তাদের সন্তানকে খুন করা হয়েছে সুপরিকল্পিতভাবে।

প্রথমেই প্রশ্ন এসেছে, বিষণ্নতা আর কাজ থেকে দূরে রাখা, অর্থাৎ স্বজনপ্রীতি করে কাজ থেকে বঞ্চিত করা—এসব চাপেই কি ৩৪ বছরেই জীবনের চাকা থেমে গেল প্রতিভাবান অভিনেতার? এ পথেই হিসাব–নিকাশ চলছে। চলছে পুলিশের নানা পর্যায়ের জিজ্ঞাসাবাদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভক্তরা নিজেদের মতো নানা রকমের বিশ্লেষণ, যুক্তি দিচ্ছেন। এরই মধ্যে চাঞ্চল্যকর দাবি সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এন কে সুদের। ইন্ডিয়ান সিকিউরিটি রিসার্চ গ্রুপ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও বার্তায় তিনি এসব নানা যুক্তি দিয়ে দাবি করেছেন, সুশান্তের অপমৃত্যু আত্মহত্যা নয়, হত্যা; যার সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিমের যোগসূত্র রয়েছে। সে ভিডিও বার্তা থেকে খবরটি প্রকাশ করেছেন ইন্ডিয়ান টাইমস, এবিপি লাইভসহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় গণমাধ্যম।

ভিডিও বার্তায় সুশান্ত সিংহ রাজপুতের আত্মহত্যার ঘটনার সঙ্গে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তাঁর দাবি, ঘটনাটি নিখুঁতভাবে ছক কষে ঘটানো হয়েছে। সুদের দাবি, ডন দাউদ ইব্রাহিম এখন মুম্বাইয়ে না থাকলেও এখনো তাঁর প্রভাব আছে বলিউডে। পেশীবল, অর্থ ও উচ্চপদে আসীনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে দাউদ এখনো মুম্বাইয়ের অপরাধজগৎকে নিয়ন্ত্রণ করেন।

এমন ব্যাখা দিয়ে সুদ তাঁর বক্তব্যে সন্দেহ প্রকাশ করেন, দাউদের কোনো প্রতিনিধির হাতে সুশান্তের খুন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনিতে গত কয়েক মাসে সুশান্তকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এ জন্য তিনি প্রায় সিমকার্ড বদলেছিলেন ৫০ বার। কেউ তাঁকে খুন করে ফেলতে পারে, এ আশঙ্কায় অভিনেতা ঘুমাতেন গাড়িতে, এমনটাও বলেছেন সুদ। বক্তব্যে সুদ আরও বলেছেন, পেশাদারেরা সুশান্তকে খুন করেছে। তাঁর যুক্তি, অভিনেতার মৃত্যুর আগের দিন সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে দেওয়া থেকে শুরু করে, ডুপ্লিকেট চাবি হারিয়ে যাওয়ার মতো অনেক তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, তা দেখিয়ে দেয়, কেউ অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় সুশান্তের খুনের ছক কষেছে। বলিউডে এখনো দাউদ ইব্রাহিমের প্রভাব রয়েছে। সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনা এমন প্রভাবের লক্ষণ।

এদিকে সুশান্তের মৃত্যুতে বলিউডের নানান অপ্রকাশিত তথ্য বেরিয়ে এসেছে। চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে নানামুখী গবেষণা। একে একে মুখ খুলছেন নেপোটিজমের শিকার অভিনয়শিল্পী ও পরিচালকেরা। আর এ ঝড়ে সবচেয়ে বেশি বিদ্ধ হলেন পরিচালক-প্রযোজক করণ জোহর। বিহারের মুজাফফরপুরে বলিউডের আটজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নামে মামলা করা হয়েছে। সুশান্তের মৃত্যুর কারণ হিসেবে একতা কাপুর, সালমান খান, করণ জোহর, সঞ্জয় লীলা বানসালি, আদিত্য চোপড়া, সাজিদ নাদিয়াদওয়ালা, ভূষণ কুমার, দীনেশ ভিজানের বিরুদ্ধে আইনজীবী সুধীরকুমার ওঝা মামলা করেছেন। মুম্বাই পুলিশও প্রায় ৩০ জনকে জেরা করেছে সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তের ঘটনায়।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *