সেনাবাহিনী দেশের আস্থা ও গর্বের প্রতীক: রাষ্ট্রপতি

0
army

army

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, মাতৃভূমির সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রাখতে জীবনবাজি রেখে কাজ করছে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী দেশের আস্থা ও গর্বের প্রতীক।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর স্পেশাল ফোর্সের সদস্যরা দেশের চৌকস, সুশৃঙ্খল ও দুঃসাহসী সেনানী। দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ ও আত্মোৎসর্গ করার সংকল্পে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী সেনানিবাসে ১ প্যারাকমান্ডো ব্যাটালিয়নের জাতীয় পতাকা প্রদান কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি সেনাবাহিনীকে একটি প্রশিক্ষিত, সুশৃঙ্খল ও আধুনিক সাজসজ্জায় সজ্জিত বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার। বর্তমান সরকারের রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের আলোকে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি প্রতিষ্ঠিত ও গ্রহণযোগ্য বাহিনী হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছে। সেবা ও কর্তব্য পরায়ণতার মাধ্যমে এই বাহিনী জনগণের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং সমগ্র জাতির আস্থা অর্জন করেছে।

অনুষ্ঠানে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’পরিচালনার জন্য সেনাবাহিনী ১ প্যারাকমান্ডোর প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

তিনি বলেন, নিজেদের কোনো ক্ষতি ছাড়াই ১ প্যারাকমান্ডো ব্যাটালিয়ন ১৩ দেশি-বিদেশি নাগরিককে উদ্ধার দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।

সিলেটের আতিয়া মহলেও সাহসিকতার সঙ্গে কমান্ডোরা ‘অপারেশন টোয়াইলাইট পরিচালনা করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জঙ্গিবাদ এখন বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি। এ অবস্থায় প্যারাকমান্ডো ব্যাটালিয়নের গুরুত্ব অপরিসীম।

তিনি বলেন, দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, এ বছর চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে অমূল্য প্রাণের বিনিময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাবার, পানি ও চিকিৎসা পৌঁছে দিয়ে সেনাবাহিনী আর্তমানবতার সেবায় অনন্য নজির স্থাপন করেছে।

উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যাদুর্গত এলাকায় সেনাবাহিনী কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে উল্লেখ করে সেনাবাহিনীকে দেশের যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় এভাবেই প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, সামরিক জীবনে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জিত হয় এবং নৈপুণ্য নিশ্চিত করা যায়।

সর্বোত্তম প্রশিক্ষণ ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যেই এক প্যারাকমান্ডো ব্যাটালিয়ন বাঙালি জাতির সুনাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে।

প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নের এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।

এর আগে রাষ্ট্রপতি রাজশাহী সেনানিবাসের শহীদ কর্নেল আনিস প্যারেড গ্রাউন্ডে সেনাসদস্যদের কুচকাওয়াজ অভিবাদন গ্রহণ করেন এবং ১ প্যারাকমান্ডো ব্যাটালিয়নকে জাতীয় পতাকা প্রদান করেন।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরারসহ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকালে রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে গেলে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, বগুড়া এরিয়ার কমান্ডার মেজর জেনারেল মোশফেকুর রহমান, বিআইআরসি কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আশরাফ-উল কাদের, অ্যাডহক প্যারাকমান্ডো ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈন উদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী অভ্যর্থনা জানান।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *