স্বর্ণের দাম ভরিতে কমছে ৩৫০০ টাকা

0
gold jewelry

বিশ্ববাজারে অবশেষে সোনার দাম কমতে শুরু করেছে। সে জন্য বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি দেশেও ভরিতে সাড়ে তিন হাজার টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাতে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার অলংকার কিনতে লাগবে ৭৩ হাজার ৭১৬ টাকা। নতুন দর সারা দেশে কার্যকর হবে কাল বৃহস্পতিবার।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি আজ বুধবার রাত সাড়ে আটটায় সোনার দর কমানোর সিদ্ধান্তটি জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দরপতন ঘটলেও সমিতি দাবি করেছে, দেশে সোনার বাজারে মন্দাভাব ও ভোক্তাসাধারণের কথা চিন্তা করে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ডলার ছুঁয়ে যায়। তখনই জুয়েলার্স সমিতি দেশের বাজারে ভরিতে ৪ হাজার ৪৩৩ টাকা বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়। তাতে প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৭ হাজার ২১৬ টাকায় দাঁড়ায়। এটিই দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম। গতকাল মঙ্গলবার থেকে বিশ্ববাজারে দাম পড়তে থাকে। আজ রাত সাড়ে নয়টায় প্রতি আউন্সের দাম ছিল ১ হাজার ৯৪০ ডলার।

এদিকে দাম কমানোর কারণে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার অলংকার কিনতে লাগবে ৭৩ হাজার ৭১৬ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেট ৭০ হাজার ৫৬৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৬১ হাজার ৮১৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার অলংকার কিনতে ৫১ হাজার ৪৯৭ টাকা লাগবে গ্রাহকদের।

বুধবার পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা ৭৭ হাজার ২১৬ টাকা, ২১ ক্যারেট ৭৪ হাজার ৬৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৬৫ হাজার ৩১৯ টাকায় এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা বিক্রি হয়েছে ৫৪ হাজার ৯৯৬ টাকায়। আগামীকাল থেকে ২২, ২১, ১৮ ক্যারেট ও সনাতন পদ্ধতির সোনার ভরিতে ৩ হাজার ৫০০ টাকা কমবে।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ২২ ক্যারেটের সোনার ভরি ছিল ৫৮ হাজার ২৮ টাকা। তারপর এপ্রিল ও মে ছাড়া প্রতি মাসেই দাম বেড়েছে। মাঝে ফেব্রুয়ারিতে একবার কমেছিল। সব মিলিয়ে সাত মাসে সোনার দাম ভরিতে ১৯ হাজার ১৮৮ টাকা বাড়ে। তাতে নতুন অলংকার বিক্রি ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। অন্যদিকে বেশি মুনাফার আশায় গ্রাহকদের মধ্যে সোনার পুরোনো অলংকার বিক্রির প্রবণতা বাড়ে।

দেশের বাজারে বছরে ২০ থেকে ৪০ মেট্রিক টন সোনার চাহিদা রয়েছে। তার মধ্যে ১০ শতাংশ পুরোনা সোনার অলংকার গলিয়ে সংগ্রহ করা হয়। এত দিন বৈধভাবে আমদানির সুযোগ না থাকায় চাহিদার বাকি ৯০ শতাংশ সোনা ব্যাগেজ রুলসের মাধ্যমে আসে। করোনাভাইরাসের কারণে অধিকাংশ আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকায় ব্যাগেজ রুলসের আওতায় সোনার বার আসা কমে গেছে। তবে জুন মাস থেকে বৈধভাবে সোনা আমদানি শুরু হয়েছে।

মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার উত্তেজনা, বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে অস্থিরতা, মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফা ঢেউ ও ডলারের দাম কমে যাওয়ায় মানুষ সোনাকে নিরাপদ বিনিয়োগ বলে মনে করছেন। ফলে চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে সোনার। লেবাননের বৈরুতে বিস্ফোরণের পর সোনার মূল্যবৃদ্ধিতে নতুন করে হাওয়া লাগে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *