যে কারণে নোবেল পেতে পারেন শেখ হাসিনা

0
pm nobel

pm nobel

আগামী ৬ অক্টোবর নরওয়ের রাজধানী অসলোতে ঘোষিত হবে নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০১৭। নানা বিতর্ক এবং রাজনীতিকরণের পরও নোবেল শান্তি পুরস্কার এখনো বিশ্বে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার। সারা বিশ্ব তাকিয়ে থাকে, কে এই পুরস্কার পাচ্ছেন তা দেখবার জন্য। এ বছর নানা কারণেই নোবেল শান্তি পুরস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আলফ্রেড নোবেলের উইল অনুযায়ী বিদায়ী বছরে যিনি সামরিক শক্তি অবলুপ্ত করার ক্ষেত্রে সম্প্রদায় এবং জাতিসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভালো কাজ করেছেন এবং যিনি শান্তির সম্মিলনের উদ্যোক্তা এবং বিকাশ করার জন্য অবদান রেখেছেন। যদিও আশির দশক থেকেই বিশ্ব শান্তির নানামাতৃক বিচার বিবেচনা সামনে এসেছে। এ কারণে ক্ষুদ্র ঋণ থেকে শুরু করে শিশু অধিকারের জন্য কাজ করার স্বীকৃতি হিসেবেও নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

এবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম বিশ্ব গণমাধ্যমে এসেছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বিশ্ব বিবেকের কণ্ঠস্বর হিসেবে এসেছেন। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে নোবেলজয়ী, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষাবিদ,গবেষক ও শান্তিকামী বিশ্ব ব্যাক্তিত্বরা মনে করছেন ১০ টি কারণে শেখ হাসিনার এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া উচিত। তাদের মতামতগুলোকে একত্রিত করে, ১০ টি কারণ এখানে উল্লেখ করা হলো:

রোহিঙ্গা ইস্যু: নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ হয়েও বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। মিয়ানমার সরকারের সামরিক উসকানির বিপরীতে তিনি শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক পথ গ্রহণ করেছেন। এটা আলফ্রেড নোবেলের উইলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

‘জনগণের ক্ষমতায়ন’: শেখ হাসিনার বিশ্বশান্তির দর্শন ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’। এই বিশ্বশান্তির দর্শন ২০১২ সালে জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে। এই দর্শনে বৈষম্য হ্রাস এবং অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথনকশা দেওয়া হয়েছে।

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন: বর্তমান বিশ্বের শান্তির অন্যতম প্রধান শত্রু হলো জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ। জঙ্গি দমনে সারা বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে আর্বিভূত হয়েছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ হোলি আর্টিজানে নারকীয় সন্ত্রাসী হামলার পর জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে শান্তিপূর্ণ পন্থায় জঙ্গিবাদ মোকাবেলা, সারা বিশ্বের জন্য অনুকরণীয়।

বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স: ভারতের বিচ্ছিন্নবাদীদের জন্য বাংলাদেশ ছিল অভয়ারণ্য। এখানে তারা সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে ভারতে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দিতো। শেখ হাসিনা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেন। শান্তি বিকাশে এটি একটি অন্যন্য অর্জন।

রাজনৈতিক সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ বন্ধ: বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর থেকেই রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও সহিংসতা ছিল একটি প্রধান সমস্যা। প্রতিবছর এই ধরনের সহিংসতায় অন্তত দুই হাজার মানুষ প্রাণ হারাতো বলে অ্যমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মনে করে। ২০১৫ সাল থেকে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দূরদর্শিতায় বাংলাদেশ রাজনৈতিক সন্ত্রাস মুক্ত হয়েছে। হরতাল, জ্বালাও পোড়াও এর মত সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রায় বন্ধ হয়েছে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার: একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা গণহত্যা, নারী নিপীড়ন, লুটপাট এবং অগ্নি সংযোগের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিচার শেখ হাসিনার শান্তি মিশনের একটি বড় অর্জন। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িতদের প্রচলিত আইনের আওতায় এনে ন্যয় বিচার নিশ্চিত করা- শান্তির পক্ষেই এক পদযাত্রা। এটা সারা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের জন্য প্রেরণার উৎস।

শান্তিপূর্ণ পন্থায় সমুদ্র সীমা নির্ধারণ : সমুদ্র সীমা নিয়ে দেশে দেশে যুদ্ধ নতুন নয়। বিশ্বশান্তির জন্য এটি একটি চিরস্থায়ী হুমকি। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত এবং মিয়ানমারের সমুদ্র সীমা বিরোধ ছিল দীর্ঘদিনের। শেখ হাসিনা সামরিক পন্থায় না গিয়ে আন্তজার্তিক আদালতের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই বিরোধ নিস্পত্তি করেন। সারা বিশ্বের জন্য এটি একটি ভালো দৃষ্টান্ত।

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত সমস্যা স্বাধীনতার পর থেকে। বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইন্দিরা গান্ধী ছিটমহল চুক্তি করলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। শেখ হাসিনা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়ন করেন এটিও বিশ্বশান্তির এক উজ্জ্বল উদাহরণ।

শান্তির সৈনিক সেনাবাহিনী: সেনাবাহিনীর প্রধান কাজ দেশ রক্ষা করা – এটাই বিশ্বে প্রচলিত রীতি। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতার সেবা, দূর্গতদের সহায়তার কাজে ব্যবহার করা শুরু করেছেন। বন্যায়, দুর্যোগে, এমনকি রোহিঙ্গা শরনার্থীদের ত্রাণ বিতরনেও কাজে লাগানো হচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। যুদ্ধ নয় শান্তির শ্বেত পতাকা বাহক হিসেবে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নতুন পরিচয় দিয়েছেন।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *